বিকাশ একাউন্টেই পাবেন ১০ হাজার টাকা ডিজিটাল লোন

বিকাশ একটি নতুন প্রকল্পের অধীনে সিটি ব্যাংক এর সাথে একত্রিত হয়ে চালু করতে যাচ্ছে দেশের প্রথম ডিজিটাল ঋণ বিতরণ সেবা। এই মুহূর্তে বিকাশ লোন সেবাটি পরীক্ষামূলক ভাবে চলছে। এর আওতায় সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা ডিজিটাল লোন পাওয়া যাবে।

বেসরকারি ব্যাংক সিটি ব্যাংকের এই জামানতবিহীন লোন বিকাশ একাউন্টে পাওয়া যাবে তাৎক্ষণিকভাবে। চলুন জেনে নেয়া যাক, বিকাশ এবং সিটি ব্যাংক এর এই ডিজিটাল ঋণ বিতরণ সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ কিছু প্রশ্নের উত্তর।

কত টাকা বিকাশ লোন পাওয়া যাবে?

বর্তমানে সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত ঋণ প্রদান করা হবে বিকাশের এই ডিজিটাল লোন প্রকল্পের আওতায়। তবে ভবিষ্যতে এই অংক বাড়ানো হবে বলে আশা করা যায়৷

বিকাশ ঋণ এ কত শতাংশ সুদ প্রদান করতে হবে?

বাংলাদেশ ব্যাংকের দেয়া নিয়ম মেনে ৯ শতাংশ হারে সুদের বিনিময়ে পাওয়া যাবে এই বিকাশ ডিজিটাল লোন।

বিকাশ ডিজিটাল ঋণ গ্রহণের শর্তসমূহ কী?

সিটি ব্যাংক ও বিকাশের এই ডিজিটাল ঋণ সেবায় সবচেয়ে সুবিধাজনক ব্যাপার হল উপযুক্ত বিকাশ গ্রাহক বিকাশ অ্যাপ থেকে যেকোনো সময় যেকোনো স্থানে বসে এই ঋণ গ্রহণ করতে পারবেন। বিকাশের উপযুক্ত গ্রাহকগণ কোনো জামানত ছাড়াই ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত এই ঋণ নিতে পারবেন। তবে বর্তমানে পরীক্ষামূলকভাবে শুধুমাত্র বাছাইকৃত বিকাশ গ্রাহকরা এই লোন পাবেন, কারণ সেবাটি সম্প্রতি পাইলট প্রকল্প হিসেবে চালু হয়েছে।

বিকাশ ডিজিটাল লোন কীভাবে পাবো?

বর্তমানে পাইলট প্রকল্পের আওতায় চালিত হচ্ছে এই ডিজিটাল ঋণ সেবা কার্যক্রম। অর্থাৎ নির্দিষ্ট সংখ্যক নির্বাচিত গ্রাহকগণই এই ঋণ নিতে পারবেন বিকাশ অ্যাপ ব্যবহার করে। এই প্রকল্প সফল হলে আরো বেশি পরিমাণ বিকাশ গ্রাহকের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হবে সেবাটি।

বিকাশ লোন পাওয়ার জন্য পাইলট প্রকল্পে নির্বাচিত গ্রাহকরা তাদের বিকাশ অ্যাপে ঋণ বা লোন আইকনটি দেখতে পাবেন। ঋণ নিতে গ্রাহককে তার ই-কেওয়াইসি ফরমে বিকাশকে দেয়া তথ্য সিটি ব্যাংককে দেয়ার সম্মতি দিতে হবে। এরপর ঋণের পরিমান এবং নিজের পিন দিয়ে সাথে সাথেই বিকাশ অ্যাকাউন্টে ডিজিটাল ঋণের টাকা পেয়ে যাবেন। এই ঋণের সঙ্গে প্রযোজ্য সুদ ও অন্যান্য বিধিবিধান বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী প্রতিপালিত হবে।

কারা বিকাশ ঋণ পাবেন?

আগেই যেমনটি বলেছি, আপাতত নির্বাচিত বিকাশ গ্রাহকগণই ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত এই ঋণ নিতে পারবেন। প্রকল্পটি যদি সফল হয়, তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদনক্রমে সেবাটি আরো বেশি বিকাশ গ্রাহকের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে।

আপনি বিকাশ লোন পাবেন কিনা তা আপনার ক্রেডিট অ্যাসেসমেন্ট এর উপর নির্ভর করবে। আপনার তথ্য বিকাশ এবং সিটি ব্যাংক আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে বিশ্লেষণ করে দেখবে। যদি তারা মনে করে যে আপনি এই লোন পাওয়ার উপযুক্ত, তাহলে আপনার বিকাশ অ্যাপে এই লোন নেয়ার অপশন পাবেন।

বিকাশ লোন পরিশোধের নিয়ম কী?

ঋণ নেওয়ার পর পরবর্তী তিন মাসে, একই পরিমাণ অর্থ  তিন কিস্তিতে গ্রাহকের বিকাশ অ্যাকাউন্ট থেকে নির্ধারিত তারিখে স্বয়ংক্রিয়ভাবে পরিশোধিত হয়ে যাবে। পরিশোধের তারিখের আগে গ্রাহক এসএমএস এবং অ্যাপের মাধ্যমে এ সংক্রান্ত নোটিফিকেশন পাবেন।

ঋণ গ্রহণকারীগণ ঠিক সময়ে ঋণ পরিশোধ করছে কিনা, তাও পর্যবেক্ষণ করা হবে। পরবর্তী ঋণ প্রদানে এই ব্যাপারটিও বিবেচ্য হবে।

সিটি ব্যাংক ও বিকাশ কেন এই ঋণ প্রদান করছে?

প্রকল্পটি সম্পর্কে সিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মাসরুর আরেফিন বলেছেন, “আমরা সবসময়ই গ্রাহকের প্রয়োজনে আরো কাছে থাকার চেষ্টা করি। আমাদের দেশে অনেকেরই, বিশেষত: ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের হঠাৎ-ই অর্থের প্রয়োজন হয়। সেটি কিভাবে আরো সহজে তাদের কাছে পৌঁছে দেয়া যায় এবং তারা যেন স্বাচ্ছন্দ্যে সেই অর্থ ব্যবহার করতে পারেন, সেটি মাথায় রেখেই এই ডিজিটাল ঋণের যাত্রা। আমাদের এই পাইলট প্রকল্পটি নীরিক্ষামূলক, এই প্রকল্পে অর্জিত অভিজ্ঞতা নিয়ে ক্রমোন্নয়নের মাধ্যমে গ্রাহকের জন্য আরও ভালো সেবা নিয়ে আসতে পারবো বলেই আমাদের আশা।”

উদ্যোগটির বিষয়ে বিকাশ সিইও কামাল কাদীর জানিয়েছেন, “প্রান্তিক সহ সকল শ্রেণীর মানুষের জীবনের মানোন্নয়ন এবং আর্থিক অর্ন্তভুক্তিতে আরো জোরালো ভূমিকা রাখতে বিকাশের মত কার্যকর ডিজিটাল আর্থিক প্ল্যাটফর্ম ও বিশাল গ্রাহক ভিত্তিকে ব্যবহার করে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো সৃজনশীল নতুন নতুন সেবা প্রচলন করতে পারে। সিটি ব্যাংকের এই ডিজিটাল ঋণ প্রকল্প তারই একটি উদাহরণ। জরুরী মুহূর্তে তাৎক্ষণিক জামানতবিহীন এই ঋণ প্রান্তিক মানুষ, তরুণ সমাজ, প্রান্তিক ব্যবসায়ীদের জন্য আর্শীবাদ হবে বলেই আমাদের বিশ্বাস।”